Friday, July 27, 2018

ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে আয়ের উপায়


     ইন্সটাগ্রাম ফেসবুক, টুইটার, টাম্বলার এবং ফ্লিকার মত অনলাইনে ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করার এমন একটি অনলাইন মোবাইল ফটো শেয়ারিং, ভিডিও শেয়ারিং এবং সামাজিক নেটওয়ার্কিং পরিসেবা। ইন্সটাগ্রাম এর মাধ্যমে ছবি এবং ১৫ সেকেন্ডের দৈঘ্যের ভিডিও আপলোড করা যায। প্রতিদিন ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করে যারা কিনা ফটো শেয়ার করে থাকে। প্রতিদিন ৭০ মিলিয়ন স্থিরচিত্র এবং ভিডিও শেয়ার করা হয় ইন্সটাগ্রাম এর মাধ্যমে।

     সারা বিশ্বে ৫০ কোটি অ্যাকাউন্ট ও ৩০ কোটি দৈনিক ব্যবহারকারী আছে ইনস্টাগ্রামে। বিখ্যাত ব্যক্তি থেকে শুরু করে তারকাসহ অনেকেই তাঁদের জীবনযাপনের অনেক বিষয় ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন। ইনস্টাগ্রাম থেকে যারা আয় করতে চান তাঁদের ইনফ্লুয়েন্সার বলে। ইনফ্লুয়েন্সার হতে হলে কমপক্ষে তিন হাজার ফলোয়ার থাকতে হয়ে। যাঁদের ফলোয়ার বেশি তাঁদের কাছে বিভিন্ন ব্র্যান্ড থেকে তাদের প্রমোশনের জন্য যোগাযোগ করে। এভাবেই বড় আয়ের সুযোগ তৈরি হয়। যাঁদের ফলোয়ার যত বেশি তাদের আয় তত বেশি। তিন হাজার বা তার কাছাকাছি ফলোয়ার থাকলে তাদের মাইক্রোইনফ্লুয়েন্সার বলে। প্রতিটি পোস্টের জন্য খরচ ধরা হয়। যাঁদের এক লাখ বা দেড় লাখের বেশি ফলোয়ার আছে তারা প্রতি পোস্টে ৪০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন। সর্বনিম্ন পোস্ট প্রতি ৩ থেকে ৫ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

Wednesday, July 18, 2018

ইনস্টাগ্রাম তারকা: উদ্যোক্তায় পরিণত হওয়ার গল্প

ব্রাডলি সাইমন্ডস এর পেশাদার ফুটবল হওয়ার স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু মাত্র ১৯ বছর বয়সেই যখন মাঠে মারা যায় তখন অর্থ আয়ের জন্য তিনি বেছে নেন একটি ভিন্ন পথ।
'হেলথ অ্যান্ড ফিটনেস' বিষয়ের দারুণভাবে আগ্রহী ব্রাডলি তখন সিদ্ধান্ত নেন যে অন্যদের ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করবেন।
এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ব্রাডলি শুরুতে তার নিজের ও বন্ধুদের ছবি পোস্ট করতে শুরু করেন।
কিন্তু তিনি আসলে খুঁজছিলেন একটি সুযোগ।
"আমি আসলে ফিটনেস ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কনটেন্টগুলো পোস্ট করতে শুরু করলাম। এটি করতে করতেই কিছু সেলেব্রিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হলাম"।
এক পর্যায়ে কিছু ফুটবলার তাদের প্রশিক্ষণে সহযোগিতার অনুরোধ করলো।
"আমি পোস্ট অব্যাহত রাখলাম, ব্লগিং চললো- ভবিষ্যতের একটা লক্ষ্য দাঁড় করালাম যে একটি জিম খুলবো যেখানে স্বাস্থ্যকর খাবারেরও ব্যবস্থা থাকবে"।
আর এভাবে ইনস্টাগ্রাম পোস্ট তাকেই পরিণত করলো একজন সফল উদ্যোক্তায়।
ফেসবুকের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রাম বিবিসিকে জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী তাদের প্রায় আড়াই কোটি বিজনেস প্রোফাইল আছে।
ব্রাডলিই ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে উদ্যোক্তা হওয়ার একমাত্র উদাহরণ নন।
ফুড ব্লগার এলা মিলস 'ডেলিশিয়াস এলা' নামে যে ব্র্যান্ড তৈরি করেছিলেন সেটি অবশেষে অনেক লোকসানের পর বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এছাড়াও কফি, পোশাক, প্রসাধনী সহ নানা ধরনের ব্যবসার শুরুর কাজে অনেকেই ইনস্টাগ্রামকে কাজে লাগিয়েছেন দারুণভাবে।
তাদের কেউ কেউ সফল হয়েছেন আবার কেউ কেউ লোকসানের ভারে ন্যুজ হয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন।

Friday, June 8, 2018

ইনস্টাগ্রামে ছবি-ভিডিও পোস্ট করে এখন তিনি বিলিয়নিয়ার!

মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের তালিকায় যে শীর্ষ নারী তারকারা উঠে এসেছেন তাদের মধ্যে বিউটি মোঘল বলে খ্যাত হুদা কাত্তান অন্যতম।৩৪ বছর বয়সী এই দুবাই ভিত্তিক ব্যবসায়ী ২০১৩ সালে গড়ে তোলেন কসমেটিকস ব্র্যান্ড হুদা বিউটি।

 তিনি এ তালিকায় ৩৭ নম্বরে উঠে এসেছেন। যোগ দিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী নারী অপরাহ উইনফ্রে, শেরিল স্যান্ডবার্গ ও ২০ বছর বয়সী কাইলি জেনারের মতো তারকাদের সঙ্গে।মার্কিন টিভি ও রিয়ালিটি শো তারকা কাইলি জেনার মাত্র ২০ বছর বয়সেই ৯০ কোটি মার্কিন ডলারের মালিক হয়েছেন। 

এই তারকা নিজের চেষ্টায় এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে কম বয়সে বিলিয়নিয়ার হওয়ার পথে রয়েছেন।কিন্তু কীভাবে আজ এতো টাকার মালিক এই হুদা?মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনকে তিনি বলছেন, আমি এক সময় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম। কিন্তু মেকআপ আর্টিস্ট হতে আমি ওই চাকরি ছেড়ে দিই। 

এরপর ২০১০ সালে আমি লক্ষ্য করি মেকআপ টিউটোরিয়াল, স্কিনকেয়ার রুটিন ও রূপের সৌন্দর্য নিয়ে তথ্য তুলে ধরার মতো তেমন কোনও ব্লুগ নেই। তখন আমি এ সম্পৃক্ত একটি ওয়েবসাইট চালু করি।

কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে বর্তমান এই ধনকুবেরের পথচলা শুরু হয় ২০১৩ সালে। ওই সময় তিনি তার বোন মনা ও আলিয়াকে নিয়ে টিম গঠন করেন। যারা দুজনই হুদা’স বিউটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান ইনস্টাগ্রাম অফিসার হিসেবে কাজ করেন।এই টিমের কাজ এক সময় কিম কার্দাশিয়ানও অনুসরণ করেন।কিন্তু ব্যবসার মোড়টা ঘুরান হুদাই। তিনি বুঝতে পারেন ইনস্টাগ্রামই তার ব্যবসাকে ঘুরে দাঁড় করানোর টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। 

হুদা বলেন, এই ইনস্টাগ্রামই আমার ও আমার ব্যবসাকে পাল্টে দিয়েছে। যেখানে মানুষ শুধু পরিবর্তনকেই উপভোগ করেননি, বিষয়টিকে উৎসাহের সঙ্গেও নিয়েছে।ইনস্টাগ্রামই তাকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। তার পোস্ট করা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফলোয়ারও বাড়তে থাকে। আজ তা আড়াই কোটির ওপরে পৌঁছেছে।

এই বিলিয়নিয়ার বলেন, আমি এক সময় বুঝতে পারি মানুষকে উৎসাহ দেয়া আমার উদ্দেশ্য। এর সঙ্গে টাকা ও বৈষয়িক বিষয়ের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তবে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে- ছোট একজন মানুষও এটি করতে পারে।ফোরবস এর তথ্য অনুযায়ী সেই হুদা বিউটির বাজারমূল্য এখন ১০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি।

নিউজ ডট কমের এক প্রতিবেদন বলছে, এই নারী ধনকুবের একসময় এক গ্রাহকের কাছ থেকে ইনস্টাগ্রামে একটি সিঙ্গেল পোস্টের জন্য ২ লাখ ৪০ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলারের প্রস্তাব পান কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। এখন তিনি নিজেই ইনস্টাগ্রামে প্রতিটির ছবি পোস্ট থেকে গড়ে আয় করেন ৪৪ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

বিউটি ব্লগিং ও ভিডিও শেয়ারিং এখন বিশ্বব্যাপী। ভিডিও বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করা প্রযুক্তি কোম্পানি পিক্সাবিটির তথ্য অনুযায়ী ২০১০ সালে ইউটিউবে বিউটির ভিউ যেখানে ৪০০ কোটি ছিল, ২০১৭ সালে তা ১০ হাজার ৪০০ কোটিতে লাফ দেয়।নতুন প্রজন্মের জন্য বিলিয়নিয়ার হওয়ার জন্য হুদা বিউটি তাই একটি দৃষ্টান্ত।

গ্র্যাজিয়া মিডলইস্টের প্রযুক্তি সম্পাদক অলিভিয়া ফিলিপস বলছেন, হুদা শুধু বিউটি পণ্যের প্রচার চালাননি, তিনি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের ব্যবসায়ী বিশেষ করে ব্যবসায়ী তরুণীদের জন্য এক উৎসাহের নাম। হুদা একটি সফল গল্প। আমরা তার জন্য গর্বিত।

হুদার মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করা তারকা ব্যক্তিত্বরা এখন এই শিল্পের জন্য কার্যকরী ভূমিকা রেখে চলেছে।সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিউটি প্রতিষ্ঠান ইউরোমনিটরের সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ অঞ্চলে কসমেটিকস ব্যবসা বাড়িয়ে দিতেও তারা অবদান রাখছে। ফলে এই পণ্য ব্যবহারে ব্যয় বেড়েছে। ২০১০ সালে যেখানে মানুষের কসমেটিকস পণ্যে গড় ব্যয় ছিল ১৬৮ ডলার, ২০১৭ সালে তা দাঁড়িয়েছে ২২৮ ডলারে। এই হিসাবে কসমেটিকস পণ্যে ব্যয়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং ১১ দেশের মধ্যে আমিরাত শীর্ষে অবস্থান করছে।

ইউরোমনিটরের বিশ্লেষক অ্যামনা আব্বাস বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি, সে তুলনায় তাদের পণ্য বেশি কিনছে ভোক্তারা। অর্থাৎ নতুন পণ্যে প্রচার ও বিক্রি বাড়াতে ব্র্যান্ড ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্লগাররাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। 

তবে এই বাজারজাত কৌশল শুধু ইন্টারনেট নির্ভর দর্শক-শ্রোতার কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।